ঈশ্বরের প্রতি
প্রভু আমার, প্রিয় আমার
কোনো দিন তোমাকে চিঠি লেখা হয়নি, ভাবিওনি।তোমার সাথে তো সবসময় কথা হয়,তুমি অন্তর্যামী, তবু,সাধ হল একটা চিঠি লিখতে।
তুমি তো জগজ্জননী,তাই মাগো,তোমার সংগে আনন্দ শেয়ার করার সাথে সাথে দুঃখের কথা ও বলবো।
ধৈর্য্য নিয়ে চিঠি টা পড়বে মাগো। আঠাশ বছর ধরে যে জীবন কে আমার হাসি তে,খুশি তে,আনন্দে,রঙে, রসে ভরিয়ে রেখে ছিলে,লেখা পড়ার জগতে আমাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে মনের মত চাকরি দিয়ে ছি লে,তাকে তুমি তিন বছরের মধ্যে অনাথ করে দিলে কেন?
এই তোমার ইচ্ছে ছিল মাগো?জীবন যুদ্ধে এতখানি লড়াই করার শক্তি তুমি আগেই দিয়ে রেখে ছিলে,তাই পেরিয়ে এলাম দীর্ঘ পথ।সেদিন বসে ভাবছিলাম, আজ অবধি কুড়ি টা মৃত্যু আমি দেখেছি, তোমার কি মনেহয় সোনা মা,আমার কপালে কি আরও অঘটন দেখতে হবে নাকি?
মার জন্য, বাবার জন্য খুব মন কাঁদে।যখনি কোন কষ্ট পাই,মনে হয়,মা থাকলে এমনটা হতনা।কতজনের ভালো বাসাও পেয়ে ছি তোমার দয়ায়।আমার স্কুলের মেয়ে রা আমাকে যে এত ভালো বাসে, তাতো তোমার ই দেওয়া।
আমার ছেলে আরস্বামী কে দেখো মা।ওদের যেন কোন কষ্ট পেতে নাহয়।মঙ্গলবার আমার সবকথা মনদিয়ে শোন তো?আমার আর একটা আর্জি আছে, বলেই ফেলি,কাউকে বোলনা।আমার লেখা র শক্তি টা আর একটু উন্নত করে দাও,আর একটু যেন গাইতে আর বাবির মত আবৃত্তি করতে পারি!রাগ করলেনা তো এত এটা চাই ওটা চাই করছি বলে?
মারে,সমষ্টি র কথা য় আসি এবার।পৃথিবী শেষ হয়ে যাচ্ছে তো,কোভিড-কারণে।তুমি কাদের নিয়ে থাকবে আমরা যদি কেউ না থাকি?ভালো মানুষ গুলো যেন কষ্ট না পায়,দেখো।তুমি ছাড়া আমার আর কেউ নেই, কেউ না।সবাই যেন সুস্থ থাকে, এটা তোমাকে দেখতে ই হবে,মাগো।
আমার কোটি কোটি প্রনাম জানাবার আগে চুপি চুপি বলি,১৯৮৬ সালের ২৫শে জুন,রবিবারে র রাতটা আর একবার এনে দেবে নাকি?তোমার ঐ কালো পাদু’টো তে অনেক চুমু দিলাম। একদিন দেখা কোর,অপেক্ষা য় থাকবো।
ভালো থেকো।
তোমার ই—-বুনা।